img

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুনেত্রা গুপ্ত বলেছেন, বিশ্বের অনেক মানুষেরই কোভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে না। তাঁর মতে, গুরুতর শারীরিক জটিলতা না থাকলে নতুন করোনাভাইরাস প্রাণঘাতী হচ্ছে না। বর্তমান মহামারির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চিত্র এটিই। তাই বেশির ভাগ মানুষেরই এই রোগের ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে না।

অধ্যাপক সুনেত্রা গুপ্ত একজন রোগতত্ত্ববিদ। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে আলাচারিতায় অংশ নেন তিনি। সেখানে সুনেত্রা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, শারীরিকভাবে সুস্থ মানুষদের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ রোগ প্রাণঘাতী হচ্ছে না। বরং এ ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা জ্বরের চেয়ে বেশি কিছু নয়।’ তবে তিনি এও বলেছেন, বয়স্ক ও গুরুতর শারীরিক জটিলতা থাকা মানুষদের কাবু করে ফেলছে কোভিড-১৯। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে মানুষের হাতে যেসব ভ্যাকসিন আসবে, সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এসব ভ্যাকসিন গুরুতর অসুস্থদের উপসর্গ উপশমে সহায়তা করবে। সে ক্ষেত্রে যাদের শারীরিক জটিলতা কম হবে, তাদের ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার ঠেকাতে লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপের পক্ষে নন সুনেত্রা গুপ্ত। তিনি মনে করেন, কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকাতে দীর্ঘ মেয়াদে লকডাউন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ হতে পারে না। সুনেত্রার মতে, করোনাভাইরাস মহামারির ইতি ঘটবে প্রাকৃতিকভাবে এবং একসময় এটি মানুষের জীবনযাত্রার অংশ হয়ে যাবে। তিনি মনে করেন, কোভিড-১৯ শেষমেশ একটি সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসেবে পৃথিবীতে রয়ে যাবে।

কোভিড-১৯ রোগের ভ্যাকসিন তৈরি করা বেশ সহজ বলেই মনে করেন অধ্যাপক সুনেত্রা গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘চলতি গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি। আমি মনে করি, এই ভ্যাকসিন যে কার্যকর হবে, সেই প্রমাণও আমরা পেয়ে যাব।’

সুনেত্রা আরও বলেন, ‘লকডাউনের মতো পদক্ষেপ দিয়ে হয়তো ভাইরাসকে দূরে রাখা যাবে। তবে দীর্ঘকালের জন্য তা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার প্রয়োজন। তা না হলে ভাইরাস ঠেকানো সম্ভব হবে না।’

করোনাভাইরাস (কোভিড ১৯) মহামারি দুর করার যুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উজ্জ্বল আশার আলো দেখাচ্ছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি করা ভ্যাকসিন। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ভ্যাকসিন টাস্কফোর্সের প্রধান কেট বিংহ্যাম জানিয়েছেন, আগামী বছরের শুরুতেই এই ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা। করোনা মহামারি মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিনই সবচেয়ে বড় অস্ত্র হবে বলে মনে করেন তিনি।

তবে কেট বিংহ্যাম এটিও জানিয়েছেন যে, এই ভ্যাকসিন দিয়েই নতুন করোনাভাইরাস পুরোপুরি মোকাবিলা করা যাবে না। তাঁর মতে, অক্সফোর্ডের তৈরি প্রথম ভ্যাকসিনটি কোভিড-১৯ রোগের উপসর্গ উপশম করতে সাহায্য করবে। এতে করে করোনাভাইরাসের কারণে মানুষের গুরুতর অসুস্থ হওয়া কমতে পারে। তবে এই ভ্যাকসিন দিয়েই মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে না।

পুরো বিশ্বের ১৮৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস মহামারি। প্রায় এক কোটিরও বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগে ৫ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ 

এই বিভাগের আরও খবর